গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট

চাকরির জন্য দরকারি কম্পিউটার দক্ষতা।

computer-1.jpg

বর্তমান বিশ্ব এমনিতেই এখন ভার্চুয়াল কাজের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। তাই কম্পিউটার বিষয়ে মৌলিক জ্ঞান থাকাটা এখন সকলের জন্য আবশ্যক হয়ে পড়েছে। এটা না থাকলে এখন ভালো ভালো ডিগ্রি নিয়েও চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। বেশিরভাগ অফিসের কাজেই এখন প্রচলিত খাতা-কলমের বদলে কম্পিউটারের ব্যবহার অনেক বেশি। অটোমেশনের এই যুগে এসে তাই কম্পিউটারের ‘অ আ ক খ’ না জানলে চাকরি পেলেও তাতে কতদিন টিকে থাকতে পারবেন, তা বলা মুশকিল। সব ধরনের চাকরির ক্ষেত্রেই এখন এই কথা প্রযোজ্য। আজকের মূল ফিচারে সাধারণভাবে সব ধরনের চাকরিতে কী ধরনের কম্পিউটার জ্ঞান থাকা প্রয়োজন, তা তুলে ধরা হয়েছে।

বর্তমান সময়ে আপনি এমন চাকরি বিজ্ঞপ্তি খুব কমই দেখবেন যেখানে কম্পিউটারের মৌলিক অভিজ্ঞতা চাওয়া হয় না। ফলে কম্পিউটারে যাদের সাধারণ এসব দক্ষতা নেই, তারা অনেক চাকরিতেই আবেদন করতে পারেন না। অনেক কেন, এখন আসলে কম্পিউটারের মৌলিক কাজগুলো না জানলে বেশিরভাগ চাকরিতেই আবেদন করার যোগ্যতা থাকে না। এই বিষয়টিকে তাই এখন অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা প্রয়োজন সব চাকরিপ্রার্থীরই।

চাকরির আবেদন করা শুধু নয়, যারা এখন চাকরিতে রয়েছেন তাদের জন্যও কম্পিউটারের এসব মৌলিক বিষয় জানা খুব দরকার। কেননা কম্পিউটারে মৌলিক দক্ষতা আপনার অফিসের কাজ অনেক সহজ করে দেয়। অটোমেশনের এই যুগে সব অফিসেই এখন চিরাচরিত খাতা-পত্রের বদলে কম্পিউটারে তথ্য সংরক্ষণের চর্চা শুরু হয়েছে। আপনি এসব কাজে পারদর্শী না হলে চাকরিদাতা নিশ্চয়ই আপনার বদলে অন্য কাউকে খুঁজে নিতেই আগ্রহী হবেন। আবার আপনি যদি কম্পিউটারের বিভিন্ন ধরনের কাজে অনেক বেশি দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে আবার প্রতিষ্ঠান আপনার ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়বে, যা আপনার ক্যারিয়ারের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। আপনার কলিগরা তখন একটু বিশেষ সমাদর দিতেই পারে আপনাকে। ম্যানেজমেন্টের সুনজরে পড়াটাও তখন সহজ হয়ে যাবে।

কিন্তু আপনি কম্পিউটার বিষয়ে খুব বেশি স্বচ্ছন্দ্য না হলে কম্পিউটারের এসব কাজ কেমন করে শিখবেন, সেটা আপনার দ্বারা কতটুকু সম্ভব, সেসব বিষয়ে নিশ্চয়ই দ্বিধা কাজ করতে পারে। এসব ভাবনা দূর করুন। কেননা শুরু না করতে পারলে আসলে কোনোকিছুই সম্ভব নয়। তাই আজ থেকেই বসে পড়ুন বেসিক কম্পিউটার শেখায়। যেকোনো অফিসে কাজ করতে কম্পিউটারের খুব বেশি কাজ আপনাকে জানতে হবে না। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্ট, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ই-মেইল পাঠানো এবং ডাউনলোড করা—এগুলোই প্রাথমিকভাবে আপনাকে অনেকটাই যোগ্য করে তুলবে চাকরির জন্য। এখন জেনে নিন এসব প্রোগ্রামের কোনটা কোন কাজে লাগে।

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড

বর্তমানে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ব্যবহার হয় না। সামান্য একটি আবেদনপত্র লেখা থেকে শুরু করে লেখালেখির সব কাজই সম্পন্ন করা হয় মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে। ওয়ার্ড প্রসেসিং এই প্রোগ্রামে অফিসের প্রায় সব ধরনের ডক্যুমেন্ট আপনি তৈরি করতে পারবেন। কোনো লেখাকে ফরম্যাট করা, লেখার মধ্যে টেবিল তৈরি করা, বিভিন্ন ফন্ট ব্যবহার করে লেখাকে সুন্দর করে তোলা, লেখার মধ্যে ডিজাইন করা—এমন সব কাজই আপনি সহজে করতে পারবেন মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে।

মাইক্রোসফট এক্সেল

অফিসের কাজের এক্সেলও খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সফটওয়্যার। বিভিন্ন ধরনের ডাটা নিয়ে কাজ করার জন্য মাইক্রোসফট এক্সেল অপরিহার্য। সাধারণ হিসাব-নিকাশ থেকে শুরু করে অ্যাকাউন্টসের অনেক কাজের জন্যও নির্ভর করতে পারেন এক্সেলের ওপর। প্রতিষ্ঠানের বাত্সরিক রিপোর্ট তৈরি থেকে শুরু করে স্যালারি শিট, প্রতিদিনের খরচের হিসাব রাখার মতো কাজগুলোও এক্সেলে সহজে করা যায়। বিভিন্ন ডাটা সহজে বুঝার জন্য এক্সেল থেকে নানা ধরনের চার্ট বা ডায়াগ্রামও তৈরি করার সুযোগ রয়েছে। ফলে বলতে গেলে ডাটা নিয়ে কাজ করার জন্য মাইক্রোসফট এক্সেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি হাতিয়ার।

মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট

সব অফিসে বললে ভুল হবে, তবে অধিকাংশ অফিসের কাজেই এই সফটওয়্যারের ব্যবহার রয়েছে। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে মূলত যেকোনো ধরনের প্রেজেন্টেশন তৈরি করা হয়। ধরুন, আপনি আপনার বসকে নতুন একটি প্রজেক্ট আইডিয়া দেখাতে চান। সেটার জন্য পাওয়ার পয়েন্ট হতে পারে আদর্শ একটি প্ল্যাটফর্ম। পাওয়ার পয়েন্টে আপনার আইডিয়াগুলোকে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন, ছবি, চার্ট, ডায়াগ্রাম ও টেক্সটের মাধ্যমে হাজির করতে পারবেন দৃষ্টিনন্দন উপায়ে। আপনার শৈল্পিক মনের একটি ডিজিটাল প্রতিচ্ছবিও হয়ে উঠতে পারে পাওয়ার পয়েন্টের স্লাইড। কোনো প্রজেক্টের প্রতিটি বিষয়ের জন্য এতে আপনি তৈরি করতে পারবেন আলাদা আলাদা স্লাইড। এই স্লাইডগুলো সঠিকভাবে ডিজাইন করতে পারলে আপনার প্রজেক্ট কাউকে বুঝানো আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে। এখন পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইডে অডিও এবং ভিডিও যুক্ত করার সুবিধাও রয়েছে। তাই নানা ধরনের মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট দিয়ে ডিজাইন করুন চমত্কার সব স্লাইড। আর স্লাইড শো দিয়ে মুগ্ধ করুন সকলকে।

ইন্টারনেট ব্রাউজিং

ইন্টারনেট ব্রাউজিং ছাড়া প্রযুক্তি-নির্ভর এই বিশ্বে তাল মিলিয়ে চলা মুশকিল। তরুণরা অবশ্য স্মার্টফোনের কল্যাণে চলতি পথেও ইন্টারনেটের সাথে সার্বক্ষণিক যুক্ত থাকে। ইন্টারনেট আসলে তথ্যের এক বিশাল ভাণ্ডার। প্রয়োজন কেবল এখান থেকে সঠিকভাবে সঠিক তথ্যটি খুঁজে বের করা। আপনার অফিসের দৈনন্দিন কাজের জন্যও ইন্টারনেট তাই প্রয়োজনীয় হয়ে উঠতে পারে। নতুন নতুন আইডিয়ার জন্যও ইন্টারনেট হতে পারে আপনার সহায়। তাই ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ে পারঙ্গমতা এখন অপরিহার্য একটি যোগ্যতা।

ইমেইল

এখনকার যোগাযোগের জন্য আর চিঠিপত্রের চল নেই। এর জায়াগায় স্থান করে নিয়েছে ইমেইল। অফিসের মধ্যে তো বটেই, অফিসের বাইরেও যে কারো সাথে যোগাযোগের জন্য এখনকার সময়ের স্মার্ট পদ্ধতি হলো ইমেইল। তাত্ক্ষণিকভাবে ইমেইল আপনার বার্তাটি পাঠিয়ে দিবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। অফিসের নোটিশও এখন আধুনিক অফিসে ইমেইলের মাধ্যমে সার্কুলেট করা হয়ে থাকে। ইয়াহু মেইল, জিমেইলের মতো ফ্রি ইমেইল সেবাতে তাই আপনার অ্যাকাউন্ট থাকা উচিত। আর অফিসের নিজস্ব ডোমেইনে ইমেইলও প্রদান করা হয় অনেক জায়গায়। ইমেইল ব্যবহারে তাই স্বচ্ছন্দ্য হয়ে উঠতে হবে।

শিখবেন কোথায়

যদি খোঁজ নিয়ে দেখেন তাহলে দেখবেন যে আপনারই আশপাশে অসংখ্য কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আপনার কোনো বন্ধুও হয়তো বিষয়গুলোতে অত্যন্ত দক্ষ। তার শরণাপন্নও হতে পারেন। এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে অবশ্য খুব বেশি টাকাও খরচ হয় না। এগুলোর প্রতিটি বিষয়ে অবশ্য বইও পাওয়া যায় বাজারে। সেগুলো থেকে নিজে নিজেও শিখে নিতে পারেন। আর ইন্টারনেটে একটু স্বচ্ছন্দ্য হলে ইউটিউব,  শেখার জন্য পাবেন প্রচুর টিউটোরিয়াল।

তাহলে আর দেরি কেন, আজ থেকে শুরু করুন এবং বসে পড়ুন কম্পিউটারের সামনে আর আত্মস্থ করে ফেলুন দরকারি সব সফটওয়্যার।

তাছাড়া আরো বিস্তারিত জানতে এবং আপনার আশে পাশে প্রতিষ্ঠান খুজে পেতে ভিজিট করুনঃ http://tctil.com/

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top
error: Content is protected !!